October 2, 2025, 7:38 pm
আন্তর্জাতিক :
For: TEST MISSION For: TEST MISSION For: TEST MISSION

দুর্গাপূজা উদযাপন: অর্থনীতিতে সমৃদ্ধি ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ ।

মোঃ ইব্রাহিম খলিল

উৎসব অর্থনীতিতে গতি আনছে, কিন্তু নিরাপত্তা, সামাজিক সংহতি ও স্থানীয় প্রভাব মোকাবেলা জরুরি।

দুর্গাপূজার রঙিন দিনের মধ্যে — যাত্রাবাড়ি, নবান্ন, ঘুরা-বাজার, চিহ্নিত খুচরা দোকানগুলোও তার অংশ। এই উৎসব শুধু ধর্মীয় আয়োজন নয়, এটি অগণিত ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক ও সামাজিক গতিবিধির খেলা। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক নিবেদন করেছে যে, ধর্মীয় উৎসব সমাজে ভোক্তা ব্যয় বৃদ্ধি, স্থানীয় অর্থনীতি উদ্দীপনা, এবং আঞ্চলিক ব্যবসার সম্প্রসারণের পথ খুলে দেয়। তবে, এই উৎসবের সঙ্গে নিরাপত্তা উদ্বেগ, শ্রম বাজারে চাপ, এবং পরিকল্পনার অভাবও দেখা দিতে পারে।
সারা দেশের পরিবর্তন ও অর্থনৈতিক প্রভাব।ওয়ার্ল্ড ব্যাংক (২০২৫) রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ধর্মীয় উৎসব বিশেষ করে দুর্গাপূজা, পূজা পরবর্তী ব্যয় বৃদ্ধি এবং উপভোক্তা খরচে অস্থায়ী উত্থান ঘটায় (বিশেষ করে শহর ও উপজেলার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্তদের মধ্যে)।
স্থানীয় বাজারে এই ব্যয় প্রবাহ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে — পোশাক, খাদ্য, আলো ও সাজসজ্জার খাতগুলোতে ওকালতি করে। বিশেষভাবে, ছোট ব্যবসায়ীরা এই সময়ে বিক্রি বাড়ার সুযোগ পায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,“উৎসব-সম্পর্কিত অর্থ প্রবাহ যদি সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়, তা স্থানীয় উৎপাদন ও বিনিয়োগকে উৎসাহ দিচ্ছে,” — বলেন অর্থনীতিবিদ ড. সুমন চক্রবর্তী।

আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহায়তা ও রাজস্ব প্রসারণের দিক থেকে, অন্তর্বর্তী সরকারের মুখ্য উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস ইতিমধ্যে ধর্মীয় উৎসবগুলোর ক্ষেত্রে “আঞ্চলিক ব্যয় পরিকল্পনা” প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে সরকারকে বাজেট সুবিধা, কর প্রণোদনা ও নিরাপত্তা খরচ মতো দিক থেকে সমন্বয় বজায় রাখতে হবে।
জনস্বাস্থ্য এবং গ্রামীণ প্রভাব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)–এর তথ্য অনুযায়ী,জনসমাগম-ভিত্তিক বড়অনুষ্ঠানগুলোতে স্বাস্থ্যঝুঁকি যেমন সংক্রামক রোগ, পরিচ্ছন্নতার সমস্যা ও স্ট্রেস বাড়তে পারে।
গ্রামীণ এলাকায়, যেখানে চিকিৎসা অবকাঠামো সীমিত, সেখানে এসব ঝুঁকি বেশি অনুভূত হয়। এক যশোর জেলার রাধানগরের স্থানীয় প্রবীণ শ্রীমতি মেঘলিনী বললেন, “মন্দির আশেপাশে মানুষের ঢল, পরিপক্ক পানি ও দর্জি দোকানে ভিড় — এইসব দেখে আমরা উদ্বিগ্ন হই।”
সরকারি নির্দেশনায় স্থানীয় প্রশাসনকে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে এবং হাসপাতাল, ক্লিনিক ও অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও সামাজিক চ্যালেঞ্জে দুর্গাপূজা উৎসবের অর্থনৈতিক গতি — বিশেষ করে খাদ্য, বস্ত্র ও খুচরা খাতে — অনেক এলাকায় নব ব্যবসা সৃষ্টি করেছে।
তবে, যদি পরিকল্পনা ও নিরাপত্তা উপেক্ষিত হয়, তাহলে সামাজিক উত্তেজনা, হেফাজতের ঘাটতি এবং সাম্প্রদায়িক বিভাজনের সম্ভাবনার হাতছানি দেখা দিতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, হিলসা রপ্তানির বিষয়টি চিরকালই একটি কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ রাখে — ২০২৫ সালের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১,২০০ মেট্রিক টন হিলসা রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছে দুর্গাপূজা উপলক্ষে। এই সিদ্ধান্ত কেবল অর্থনৈতিক মুনাফা বাড়াচ্ছে না, একই সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে।

দুর্গাপূজা শুধু ধর্মীয় উৎসব না — এটি অর্থনৈতিক গতিবর্ধন এবং সামাজিক সংযোগের প্ল্যাটফর্ম।

এক্ষেত্রে সফল উদযাপনের জন্য প্রয়োজন: সুশৃঙ্খল পরিকল্পনা — উৎসব এলাকায় ভোগ্যপণ্য, যানবাহন ও জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ।নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সচেতনতা — প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি, থানাদায়িত্ব ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রস্তুতি।আঞ্চলিক সমন্বয় — জেলার জেলায় স্থানীয় ব্যবসা ও স্মল-স্কেল শিল্পকে উৎসাহ দেওয়া.

আমাদের সহযোগিতা জরুরি — উৎসব উদযাপনে পরিবেশ রক্ষা, যানবাহন নিয়ম মেনে চলা ও সামাজিক সৌহার্দ্য বজায় রাখুন। একসঙ্গে মিলেমিশে, আমরা একটি অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ দুর্গাপূজা দেখতে পারি।

সোর্স:
ওয়ার্ল্ড ব্যাংক (২০২৫) রিপোর্ট

হিলসা রপ্তানি সংক্রান্ত সংবাদ: The Business Standard

Al Jazeera সংবাদ ও বাংলাদেশ অর্থনীতি প্রসঙ্গে বিশ্লেষণ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


লাইক পেজ