মোঃ ইব্রাহিম খলিল
ঢাকার হাজারীবাগ থেকে পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে দেশের প্রধান চামড়া শিল্পটি কয়েক বছর আগে সাভারে স্থানান্তরিত হয়েছে। নতুন শিল্পনগরীতে এ উদ্যোগ একদিকে যেমন শিল্পের আধুনিকায়ন ও রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ এনে দিয়েছে, অন্যদিকে স্থানীয় মানুষের জীবনে এনেছে নতুন চ্যালেঞ্জ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ট্যানারিগুলো থেকে নির্গত বর্জ্য এখনো সঠিকভাবে শোধন হচ্ছে না। সাভারের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, আশেপাশের পানি ও মাটিতে ছড়াচ্ছে রাসায়নিক। এর ফলে কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। একই সঙ্গে দুর্গন্ধ ও জলাবদ্ধতাও এলাকাবাসীর নিত্যদিনের সমস্যা।
তবে ইতিবাচক দিকও রয়েছে। হাজারো শ্রমিক এই শিল্পে কাজ পাচ্ছেন, এলাকায় ছোট-বড় ব্যবসা গড়ে উঠছে। পরিবহন, খাদ্য সরবরাহ থেকে শুরু করে নানা খাতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নতুন উদ্যোক্তারা। সরকার ও উদ্যোক্তাদের দাবি, এ শিল্প সঠিকভাবে পরিচালিত হলে চামড়া রপ্তানি থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পরিমাণ আরও কয়েকগুণ বাড়ানো সম্ভব।
বর্তমানে চামড়া শিল্পের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় রাখা। উন্নত দেশের ক্রেতারা পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া দাবি করছে। এজন্য সাভারের ট্যানারি শিল্পনগরীতে আধুনিক বর্জ্য শোধনাগার (সিইটিপি) প্রকল্প দ্রুত কার্যকর করা জরুরি। পাশাপাশি শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, নিরাপত্তা ও কল্যাণমূলক উদ্যোগ নেওয়ার দাবিও জোরদার হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি সময়মতো অবকাঠামো ও পরিবেশ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা যায়, তবে সাভারের চামড়া শিল্প বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রপ্তানি খাত হিসেবে বৈশ্বিক বাজারে সুনাম কুড়াবে। অন্যথায় পরিবেশ দূষণ ও বাজার সংকটের কারণে এই সম্ভাবনাময় খাত হুমকির মুখে পড়তে পারে।